২০১১ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া শহরের মোল্লাতেঘরিয়ার পূর্ব পাড়ার সাজেদুল ইসলামের ছেলে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মতাসসিম বিন মাজেদ ওরফে হৃদয় (১৪) খাতা কেনার জন্য সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে সে আর বাড়ি ফেরেনি।
পরদিন পার্শ্ববর্তী চাঁদাগাড়ার মাঠে হৃদয়ের সাইকেলটি পাওয়া যায়। এরপর ২৬ মে অপহরণকারীরা ফোনে হৃদয়ের মুক্তির জন্য ১৩ লাখ টাকা দাবি করে। ৩১ মে হৃদয়ের মা তাসলিমা খাতুন কুষ্টিয়া সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
২ জুন অপহরণকারীদের কথামতো হৃদয়ের মা দুই লাখ টাকা পৌঁছে দেন। এ সময় হৃদয়কে উদ্ধারের দাবিতে কুষ্টিয়াবাসী আন্দোলনে নামে। পুলিশ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ৩ অক্টোবর ড্যানিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর স্বীকারোক্তিতে পরদিন, অর্থাৎ অপহরণের ১৩৪ দিন পর ভেড়ামারা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের ১০ মাইল নামক স্থানে ফখরুলের ইটভাটার পাশে মিজানুর রহমানের জমিতে পুঁতে রাখা হৃদয়ের লাশের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ।
এরপর পুলিশ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
কুষ্টিয়ায় বহুল আলোচিত এই শিশু হৃদয় হত্যার দায়ে তিনজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া এই মামলায় নয়জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সাব্বির খান (২৩), হেলাল উদ্দিন ওরফে ড্যানি (২০) ও আব্দুর রহিম শেখ ওরফে ইপিয়ার (৩৮)। এর মধ্যে রায় ঘোষণার সময় সাব্বির আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুজন পলাতক।
আদালতে উপস্থিত মামলার বাদী হৃদয়ের মা তাসলিমা খাতুন জানান, তিনি এ রায়ে সন্তুষ্ট। তবে দণ্যপ্রাপ্ত দুই আসামিকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে রায় কার্যকরের দাবি জানান।
শিশুর উপর এমন অমানবিক হত্যাযজ্ঞ কখনোই মেনে নেয়া যায় না। এই ফাঁসির রায়ের মাধ্যমে আইনের প্রতিষ্ঠা হলো।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply