বেশিরভাগ পুরোনোরাই রয়ে গেলেন নৌকায়। নিকট-অতীতে এবারই সবচেয়ে কম মন্ত্রী-সাংসদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন। ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় ছাড়া মন্ত্রিসভার আর কেউ বাদ পড়ছেন না। মূল আলোচনা কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার বাদ পড়া এবং নতুন কিছু মুখ নিয়ে। তবে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা প্রায় সবাই আছেন।
রোববার আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসনে দলীয় নেতাদের মধ্যে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া শুরু করে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তালিকা প্রকাশ করেনি। এ পর্যন্ত যে তালিকা পাওয়া গেছে, তাতে কমবেশি ৩৮ জন সাংসদ বাদ পড়ছেন বলে জানা গেছে। কেউ নতুন করে মনোনয়ন পেয়েছেন, কারও চিঠিতে দুজনের নাম আছে। কোনো কোনো আসনে জোট ও শরিক দলের শক্ত প্রার্থী থাকার পরও দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
দলীয় মনোনয়নের চিঠি দেওয়াকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্য ৫৪ জন। এর মধ্যে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান, নুরুল ইসলাম নাহিদ, আ হ ম মুস্তফা কামাল, আসাদুজ্জামান নূরসহ জ্যেষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা মনোনয়ন পেয়েছেন। ১৪ দল ও জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীরাও জোটের মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
মনোনয়ন তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দলীয় নেতা হত্যার মামলায় কারাগারে থাকা টাঙ্গাইলের বিতর্কিত সাংসদ আমানুর রহমান খানের (রানা) আসনে তাঁর বাবা আতাউর রহমান খান মনোনয়ন পেয়েছেন। মাদক ব্যবসায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছিল কক্সবাজারের সাংসদ আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে। এবার এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তাঁর স্ত্রী শাহীনা আক্তার চৌধুরী।
২০১৪ সালের নির্বাচনে ৪৮ জন বাদ পড়েছিলেন। এর মধ্যে ছয়জন ছিলেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। সে তুলনায় এবার বাদ পড়ার সংখ্যা কম।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র বলছে, এবার মন্ত্রী-সাংসদদের বাদ না দেওয়ার পেছনে দুটি বিষয় কাজ করেছে। এক. মন্ত্রী-সাংসদেরা বাদ পড়লে সাধারণত দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে বাদ পড়েছেন বলে আলোচনার ঝড় ওঠে। ফলে সরকার ও দল সম্পর্কে একধরনের নেতিবাচক প্রচার হয়। এ ছাড়া মন্ত্রী-সাংসদ বেশি বাদ পড়লে মনে হতে পারে সরকার অজনপ্রিয় হয়ে পড়েছে, যার প্রভাব ভোটে পড়তে পারে। দুই. এবারই প্রথম মন্ত্রী-সাংসদেরা পদে থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ফলে প্রশাসনের ওপর মন্ত্রী-সাংসদের যে কর্তৃত্ব, তা কাজে লাগাতে চায় সরকারি দল। মন্ত্রী-সাংসদ বাদ পড়লেও তাঁরা নিজ পদে বহাল থেকে যাবেন। ফলে নতুন মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তিরা কোণঠাসা হয়ে পড়তে পারেন, কোন্দল বেড়ে যাবে, এই বিবেচনাও ছিল।
মনোনয়ন পেয়ে গেছেন অনেকেই। এখনও কেউ কেউ আছেন অপেক্ষায়। মনোনয়ন যাকেই দেয়া হোক,সকলে মিলে জনগণের পক্ষে কাজ করবেন, এমন আশা সকলের।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ সাহাজুল ইসলাম
Leave a Reply