শতবর্ষ আয়ুর প্রার্থনা আমরা কে না করি? তবে এটাও জানি, ১০০ বছর কজনইবা বাঁচে। জাপানের ক্ষেত্রে অবশ্য শত বছর বেঁচে থাকাটা তেমন আশ্চর্যজনক কিছু নয়। বর্তমানে দেশটির গড় আয়ু ৮৪ বছর হলেও ১০০ বা তার অধিক বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। আর এই বয়স্ক জনগোষ্ঠীই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের জন্য। দেশের কলকারখানার চাকা সচল রাখতে বিদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাপান। আর এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশগুলো। শ্রমবাজারে নতুন দুয়ার খুলতে পারে।
‘জন্মহার কমার পাশাপাশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে—এ সতর্কবার্তা জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের। সম্প্রতি ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই সমস্যা এখনই মোকাবিলা করার জন্য সরকারের প্রয়োজনীয় নীতিগুলোকে বেশ জোরে ঠেলা দিতে হবে। তিনি মনে করেন, শ্রমসংখ্যা ও বয়স্ক ব্যক্তিদের পেছনে ব্যয় কমাতে বেশ কিছু সংস্কার করার এখনই সময়।
বরাবরই বিদেশি নেওয়ার ব্যাপারে জাপান কিছুটা রক্ষণশীল। ফলে, মেধাবী ও দক্ষ শ্রমিকেরাও দেশটিতে কাজের সুযোগ পান কম। তবে শ্রমিকের ঘাটতি পূরণ করতে চাইলে আর দুয়ার বন্ধ করে রাখা চলে না—এটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন আবে। সম্প্রতি কর্মক্ষম মানুষের ঘাটতি পূরণ করতে বিদেশি শ্রমিক নেওয়ার কথা জানিয়েছে জাপান। বার্তা সংস্থা রয়টার্স, দ্য ইকোনমিস্ট ও টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির মন্ত্রিসভা এ–সংক্রান্ত একটি খসড়া আইন অনুমোদন করেছে। তবে ঠিক কতজন নেওয়া হবে, সে বিষয়ে সরকারি কোনো তথ্য না এলেও দেশটির গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে, এ সংখ্যা ৩ লাখ ৪০ হাজারের মতো। ২০১৯ সাল থেকে শুরু করে আগামী পাঁচ বছরে এই কর্ম ভিসা প্রদান করা হবে। এই সিদ্ধান্ত জাপানের জন্য খুবই ব্যতিক্রমী এক সিদ্ধান্ত।
আমাদের দেশের জন্যে বিশাল জনগোষ্ঠীকে এখনও বোঝা হিসেবে দেখা হয়। তবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে বোঝা যায়, কিভাবে এই জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাচ্ছে তারা। প্রয়োজনে দেশের বাইরে থেকে করমক্ষম লোক নিয়ে যাচ্ছে। সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমেই এঁদের সম্পদে রূপান্তরিত করা সম্ভব।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ সাহাজুল ইসলাম
Leave a Reply