অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে ছাত্রলীগের আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে মুখ খুলেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। প্রায় দুই কোটি টাকার ওই লেনদেনকে ‘ঈদের খরচ’ হিসেবে ‘ন্যায্য পাওনা’ দাবি করেছে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক।
একটি গণমাধ্যমে তিনি একথা স্বীকার করলেও টাকার পরিমাণটি কতো ছিলো তা জানাতে রাজি হননি ডাকসুর এই জিএস।
এর আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম অভিযোগ করে বলেছিলেন, এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার ক্যাম্পাস উন্নয়ন প্রকল্পের ‘৪ থেকে ৬ শতাংশ’ চাঁদা দাবি করেছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
জাবির উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা হয়ে না দাঁড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রদানের জন্য রাব্বানী উল্টো উপাচার্য ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তবে উপাচার্য এবং জাবি ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল রানা অভিযোগটি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এর আগে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জাবি উপাচার্যের স্বামী এবং ছেলে একটি বড় অঙ্কের কমিশন পাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখাকে ব্যবহার করেছে এবং ঈদুল আজহার আগে জাবি ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছে।’
গোলাম রাব্বানী সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার ফার্মকে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য সুপারিশ করলেও উপাচার্য তার কথা রাখেননি বলে দাবি তার।
এদিকে ছাত্রলীগ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বক্তব্যকে অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগ। শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই বক্তব্যকে ‘সম্পূর্ণ অসত্য’ দাবি করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পকে ঘিরে জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনে জড়িত থাকার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা অসত্য ও মিথ্যা। দাবি করা হয়, গত ৮ই আগস্ট উপাচার্যের বাসভবনের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে একটি বৈঠকের কথা বলা হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী আদেশে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এই বৈঠকের আলোচ্যসূচি ও আলোচনা সম্পর্কে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক অবগত ছিলেন না।
দুর্নীতির প্রশ্নে শাখা ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে চ্যালেঞ্জ করছে কিনা জানতে চাইলে সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, ‘আমরা কাউকে চ্যালেঞ্জ করছি না। রাব্বানী হয়তো না জেনে এই তথ্য দিয়েছেন।’
এদিকে গোলাম রাব্বানীর বক্তব্যকে অস্বীকার করে ‘বরং সে তার বান্ধবী দিয়ে চাঁদার জন্য ফোন দেয়াতো’ বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গোলাম রাব্বানী চাঁদার জন্য বিভিন্নভাবে বিরক্ত করতো। সে বলে, আজকাল ২% এ হয় না, ৪-৬% লাগে। তাদের কাছে অনুমতি আছে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে টাকা নেয়ার। ’
এদিকে ছাত্রলীগের কমিটির শীর্ষ নেতাদের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নানা অভিযোগে অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ নিয়ে আজ প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দিতে পারেন বলে জানা গেছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply