হারলেই বিদায়। ড্র করলে যদি-কিন্তুর হিসেবে হয়তো টিকে থাকতো আশা। কিন্তু ভাগ্য নেহায়েত খুব ভালো না হলে অসম্ভবই ছিল। তাই জয় ছাড়া কোন বিকল্প ছিল না আর্জেন্টিনার জন্য। বাঁচা মরার লড়াইয়ে এদিন দারুণ ফুটবল উপহার দিয়েই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে দলটি। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা। ১৯৯৩ সালে
শেষবার কোপার শিরোপা জেতার পর আর কোন আন্তর্জাতিক শিরোপা জিততে পারেনি আর্জেন্টিনা। ২৮ বছরের খরা কাটানোর জন্য এবার কোপার শুরুটাও ভালো হয়নি। প্রথম ম্যাচে কলোম্বিয়ার কাছে হার। পরের ম্যাচে প্যারাগুয়ের সঙ্গে ড্র। ফলে ১৯৮৩ সালের পর প্রথমবারের মতো কোপার গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ার হাতছানি। তবে এ যাত্রা সে লজ্জা থেকে দলকে রক্ষা করেছেন সের্জিও আগুয়েরো ও লাউতারো মার্টিনেজরা। ক্লাবের হয়ে আর্জেন্টাইন তারকারা দুর্দান্ত খেললেও জাতীয় দলের হয়ে বিবর্ণ থাকেন। কিন্তু এদিন দারুণ খেলেছেন দলের প্রায় সবাই। গোল না পেলেও বেশ কিছু দারুণ সুযোগ তৈরি করেছেন লিওনেল মেসি। সের্জিও আগুয়েরো খেলেছেন দুর্দান্ত। প্রায় একক নৈপুণ্যে গোল দিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন। ম্যাচের আগে এদিন বেশ কিছু পরিবর্তন নিয়েই মাঠে নামে আর্জেন্টিনা। কোচ লিওনেল স্কালোনি লাউতারো মার্টিনেজ ও লিওনেল মেসির সের্জিও আগুয়েরোকে খেলান। এছাড়া প্রথমবারের মতো বদলী খেলোয়াড় হিসেবে খেলিয়েছেন পাওলো দিবালাকেও। রক্ষণেও পরিবর্তন, খেলান হুয়ান ফয়েথ ও রেনজো সারাভিয়াকে। তাতে সাফল্যও পায় দলটি। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে গোল করার দারুণ সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। ডি-বক্সে কাতারের এক ডিফেন্ডার বল
ঠেকাতে গেলে একবারে ফাঁকায় বল পেয়ে যান লাউতারো মার্টিনেজ। কিন্তু তার ভলি লক্ষ্যে থাকেনি। তবে কয়েক মুহূর্ত পরই কাতারের ডিফেন্ডার বাসাম হিশামের ভুলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ডি-বক্সের ডান প্রান্ত থেকে বাঁ প্রান্তে সতীর্থকে পাস দিতে গেলে সে বল ধরে ফেলেন মার্টিনেজ। আর গোলরক্ষককে একা পেয়ে লক্ষ্যভেদ করতে কোন ভুল করেননি এ ইন্টার মিলানের এ স্ট্রাইকার। ২১তম মিনিটে মেসির পাস থেকে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বাইরে মারেন আগুয়েরো। ৩৯তম মিনিটে গোলবারে আবারো ফাঁকায় বল পেয়ে যান আগুয়েরো। দুর্বল শটে জটলা থেকে বল পেয়েছিলেন মার্টিনেজ। কিন্তু জোরালো শট নিতে না পারলে তা ফিরিয়ে দেন কাতারের ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের যোগ করা সময়ে সমতায় ফিরতে পারতো কাতার। ফ্রিকিক থেকে নেওয়া বাসাম আল রায়ির দারুণ শট বারপোস্টে লেগে বেড়িয়ে গেলে হতাশ হতে হয় এশিয়ার দলটিকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মেসির পাস থেকে দারুণ সুযোগ
পেয়েছিলেন আগুয়েরো। তবে দুর্বল শটে বল তুলে দেন কাতারের গোলরক্ষকের হাতে। ৬০তম মিনিটে মেসির পাস থেকে ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন আগুয়েরো। তবে শট নিতে দেরি করে ফেলায় সে শট ফিরিয়ে দেন এক ডিফেন্ডার। ৬১ মিনিটে দুই দফা কাতারকে রক্ষা করে করেন কাতার গোলরক্ষক সাদ আল সিব। আগুয়েরোর শট গোল লাইন থেকে ঠেকেই দেন তিনি। ৬৭ মিনিটে আগুয়েরোর আরও একটি প্রচেষ্টা রুখে দেন সাদ। বাঁ প্রান্ত থেকে দূরপাল্লার দারুণ শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন তিনি। ৭৩ মিনিটে অবিশ্বাস্য এক মিস করেন মেসি। তাগলিয়াফিকোর কাছ থেকে ছোট ডি-বক্সে বল পেয়ে উড়িয়ে মারেন পাঁচ বারের ব্যলন জয়ী এ খেলোয়াড়। ৮২তম মিনিটে কাতার গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেন আগুয়েরো। সতীর্থের পাস থেকে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডান প্রান্ত থেকে
কোণাকোণি এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন ম্যানসিটির এ তারকা। এরপরও বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। তবে থেকে গোল আদায় করে নিতে না পারলেও কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট পায় দলটি। মূলত দিনের অপর ম্যাচে কলম্বিয়া ১-০ গোলে প্যারাগুয়েকে হারালে সরাসরি গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয় আর্জেন্টিনার।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply