প্রচন্ড গরম থেকে শুরু করে, অতিথি আপ্যায়নে ভারী খাবারের পরই যেটার আবেদন, সেটা হলো কোক বা কোকাকোলা।
এ যুগে যখন প্রতিটি খাবার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতায় মেতেছে, তখনও ‘কোকাকোলা’-র আবেদন কিন্তু একটুও কমেনি। যুক্তরাষ্ট্রে বড় বড় সুপার মার্কেট থেকে বাড়ির পাশের ছোট দোকানটাতে এর সহজলভ্যতাই বুঝিয়ে দেয় তার কতটা চাহিদা।
কোক, পেপসি আর কেএফসি – শোনা যায়, এগুলো তৈরির রেসিপি সবার অজানা। রেসিপি যাতে কেউ ঘুণাক্ষরেও জানতে না পারে সেজন্য আছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
যদিও অনেকেই বলেন যে, কয়েক বছরের মধ্যে কোকের স্বাদে ভিন্নতা এসেছে, কিন্তু কম্পানিগুলো তাদের কথায় অটল। তবে ফুড টেকনোলজিস্ট ইনস্টিটিউটের সভাপতি জন রাফ বললেন, এটা আসলে একটা পৌরাণিক গল্পের মতো৷ এতবছর ধরে এসব খাদ্যের ফর্মুলায় পরিবর্তন না হওয়াটা একেবারেই অসম্ভব।
অ্যামেরিকার এক নম্বর পানীয় বলা হয় কোকাকোলা আর দুই নম্বর ধরা হয় পেপসিকো-কে। ১৯৯৪ সালে সিক্রেট ফর্মুলা নামে ফ্রেডেরিক অ্যালেন যে বইটি লিখেছেন, তা পড়লে একটু চমকে যেতে হয়।
বইটিতে তিনি কোকাকোলা কম্পানির সাবেক নির্বাহীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সেইসাথে কোকাকোলার আর্কাইভ ঘাঁটার সৌভাগ্য হয়েছিল তার৷ এগুলো বিশ্লেষণ করে তিনি দেখলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে কোকাকোলার ফর্মুলাতে অনেকবার পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং উপকরণ হিসেবে এতে কোকেন ব্যবহার করা হয়।
এই বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর অবশ্য কোকাকোলা কম্পানি একটি ই-মেইলে ঘোষণা দেয়, ১৮৮৬ সালে কোকাকোলা যখন আবিষ্কার হয়, তখন থেকে এ পর্যন্ত এর রেসিপিতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি এবং এতে কোনো কোকেন ব্যবহার করা হয় না।
পেপসিকো-র ক্ষেত্রে অবশ্য ঘটনা কিছুটা ভিন্ন। ১৮৯০ এর শেষের দিকে পেপসিকো তৈরি হয়। কিন্তু ১৯৩১ সালে নতুন মালিক আগের স্বাদ পছন্দ না করায় এর স্বাদে ভিন্নতা আনা হয়, যার ফলে বেশ মিষ্টি স্বাদ হয়।
১৯৮০-র দশকে কোকাকোলা ও পেপসিকো-তে কর্ন সিরাপ, চিনি এবং ক্যারামেল যোগ করা হয়। তবে এতে মূল ফর্মুলার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে দাবি করেছে দুই কম্পানি এবং তারা এখনও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, পুরোনো রেসিপিতেই বানানো হচ্ছে এসব সোডা।
গত ১৩২ বছর ধরে কোক বানানোর রেসিপি একটি ইস্পাতের ভল্টে রেখে দেয়া হয়েছে। এর আশপাশে সবসময় জ্বলতে থাকে লাল রঙের নিরাপত্তা আলো। গোপনীয়তা রক্ষার্থে সব সময় চোখ রাখছে বেশ কয়েকটি ক্যামেরা। তবে আটলান্টার কোক জাদুঘরে গেলে ক্ষণিকের জন্য দেখা মেলে এই রেসিপির, তবে তা এমন আলো আঁধারি আর ধোঁয়ার মধ্যে, যে কারো সেটা বোঝার সাধ্য নেই।
কী আশ্চর্য এই রেসিপি, যার সমাদর রয়েছে পুরো বিশ্ব জুড়েই। এর খানিকটা জানতে আগ্রহ কার না হয়? তবে জানার কোনো উপায়ও নেই।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply