গাছের ডাল পরে গাড়ি ভেঙে যায় এবং গাছে থাকা পাখিদের মল-মূত্রে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষকরা। এদিকে নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধসহ ১৬ দফা দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বুধবার ৫ম দিনে গড়িয়েছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা এমন মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।শিক্ষার্থীদের ১৬ দফা দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দুই প্রবেশ মুখ পলাশি ও বকশীবাজারে তোরণ নির্মাণ, ‘বিতর্কিত প্রক্রিয়ায়’ ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের নিয়োগ বাতিল, সাবেকুন নাহার সনির নামে একমাত্র ছাত্রী হলের নামকরণ, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, টার্ম পরীক্ষায় কোডিং সিস্টেম চালু, নিয়মিত শিক্ষক মূল্যায়ন ব্যবস্থা, ক্যাম্পাসে নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ করা, বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করা।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা দীর্ঘ দিন ধরে প্রশাসনের কাছে এ দাবিগুলো জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কোন সময়ই প্রশাসন তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যদিও সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে বিবৃতি প্রদান করেছে বুয়েটের শিক্ষক সমিতি।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী অনির্বাণ বলেন, আন্দোলনের তৃতীয় দিন শিক্ষকরা ও ডিন স্যার আমদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে আমাদের দাবিগুলো মানা হবে এ বিষয়ে তারা ভিসি স্যারের সাথে কথা বলেছেন। কিন্তু হাস্যকর বিষয় হচ্ছে এটা তারা আমাদের দাবিগুলোর বিপরীতে যুক্তিহীন কিছু কথা বলেছেন । তারা বলেছেন যে, গাছের ডাল পরে নাকি গাড়ি ভেঙে যায় এবং গাছে থাকা পাখিদের মল-মূত্রে নাকি ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট হয় তাই তারা গাছ কেটে ফেলেছে।
বুধবার সকাল ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যায়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জড় হতে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল নিয়ে ভিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন চলে।
এর আগে গত মঙ্গলবার দাবি পূরণের জন্য আন্দোলনকারীদের বেঁধে দেওয়া তিন দিনের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ায় ভিসি কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এদিন তারা পলাশি ও বকশীবাজার মোড়ে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র বিশ্ববিদ্যায়ের মেকানিক্যাল বিভাগের সমাপনী বর্ষের ছাত্র হাসান সরওয়ার সৈকত বলেন, আমরা এখনো শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয় তাহলে আমরা আরও কঠিন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।বুধবারের আন্দোলন শেষে সৈকত বলেন, বৃহস্পতি ও শুক্রবার আমাদের সাপ্তাহিক ছুটি। এ কারণে এ দুদিন আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী শনিবার সকাল থেকে আবারও আমরা আন্দোলনে নামব। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ যোগাযোগ করেনি বলে জানান।
আন্দোলন দাবিসমূহের ব্যাপারে জানার জন্য বুয়েটের ভিসি প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম একাধিকবার মুঠো ফোনে ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply