তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড গত ২ দিনে তাদের ৮১ প্রকৌশলীসহ ৩২০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মস্থল বদলে দিয়েছে। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ৪ থেকে ২৪ বছর প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ এলাকার একই অফিসে কাজ করছিলেন।
অভিযোগ আছে, একই কর্মস্থলে বছরের পর বছর থাকায় তারা শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার শুরু জড়িয়ে পড়েছিলেন। সম্প্রতি এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপর জ্বালানি বিভাগের আদেশে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার শুরু করে তিতাস।
গতকাল রোববার ৭ জুলাই বদলি করা হয় ১৩৩ জনকে। আর গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ১৮৭ জনকে বদলি করে তিতাস। এর আগে এত বেশিসংখ্যক কর্মীকে একসঙ্গে বদলি করার নজির নেই প্রতিষ্ঠানটিতে।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল জানান, যারা বছরের পর বছর একই জায়গায় আছেন তাদের বদলি করা হচ্ছে। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। অনেকে বদলি চান, হয় না। আবার অনেককে বদলি করলে যান না।
তিনি বলেন, দুদকের সুপারিশ ছিল, আমাদের বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ৪ থেকে ২৪-২৫ বছরও কেউ কেউ একই জায়গায় চাকরি করছিলেন। দুর্নীতির পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সেজন্য এই উদ্যোগ নেয়া জরুরি ছিল।
এমন উদ্যোগ আরও আগে নেয়া দরকার ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, কেউ দায়িত্ব নেয়নি। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে একটি ধারণাও তৈরি হয় যে, তিনিও বদলি হতে পারেন। একই জায়গায় বছরের পর বছর থাকা যাবে না।
তিতাস সূত্র বলছে, রোববার বদলি হওয়াদের মধ্যে আছেন সুপারভাইজার, বিক্রয় সহকারী, কম্পিউটার অপারেটরসহ বেশ কিছু পদের কর্মচারী। আর বৃহস্পতিবার বদলির আদেশ হওয়া কর্মীদের মধ্যে আছেন ৮১ জন প্রকৌশলী এবং ১০৬ জন কম্পিউটার অপারেটর। বদলি হওয়া কর্মীদের বেশিরভাগই কারিগরি ক্যাডারের। যেহেতু বিল আদায় থেকে সব কাজই কম্পিউটারের মাধ্যমে করা হয়, তাই কম্পিউটার অপারেটরদের ভূমিকাকে বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত এপ্রিলে তিতাসের অপেক্ষাকৃত ওপরের সারির কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়। ওই সময় প্রতিষ্ঠানটির কাঠামোর বাইরে গঠিত ১৮টি ভিজিল্যান্স টিম বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এবার মধ্যম শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মস্থল বদলে দিলো প্রতিষ্ঠানটি।
তিতাস বলছে, দুদকের প্রতিবেদন ধরে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে। এর আগে ট্রুথ কমিশনে যাওয়া ব্যক্তিদের নামের তালিকা জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এরপর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন দুর্নীতি না করতে পারে সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের অংশ হিসেবেই এই বদলি করা হয়েছে বলে তিতাসের প্রশাসন বিভাগের একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply