দুর্গাপূজা আসন্ন। আর মোটে সপ্তাহ দুয়েক পরেই শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা।
পুরো দেশের মতো বাগেরহাটের শিকদার বাড়িতে দুর্গা পূজার প্রতিমা তৈরিতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। খড়-মাটির উপর রঙ দিয়ে প্রতিমাগুলোকে নিপুণভাবে সাজাতে ব্যস্ত তারা। এ বছর বাগেরহাটে ৯টি উপজেলার ৬১৫টি পূজা মণ্ডপে হবে শারদীয় উৎসব। এবারও ব্যক্তি উদ্যোগে বাগেরহাটের হাকিমপুরের শিকদার বাড়িতে বড় পূজার আয়োজন করা হচ্ছে। এবার তৈরি করা হয়েছে ৭০১টি প্রতিমা। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
২০১০ সাল থেকে শিকদার বাড়িতে ব্যক্তি উদ্যোগে দেশের বৃহত্তম দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়। লিটন শিকদার নামে এক ব্যবসায়ী এই আয়োজন করে আসছেন। দিনদিন সেখানে প্রতিমার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ২০১৬ সালে প্রতিমার সংখ্যা ছিল ৬০১টি। গত বছর ছিল ৬৫১টি। আর এবার এই মণ্ডপে ৭০১টি প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। প্রতিমার সংখ্যার দিক দিয়ে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পূজামণ্ডপ বলে দাবি করেন পূজার আয়োজক ডা. দুলাল শিকদার ও তার ছেলে লিটন শিকদার এবং বাগেরহাট পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অমিত রায়।
প্রতিমা শিল্পী বিজয় কৃষ্ণ বাছাড় বলেন, ‘এখানে রামায়ণ ও মহাভারতের চারযুগের দেবদেবীর নানা কাহিনি অবলম্বনে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। ৮ বৈশাখ থেকে ১৬ জন কারিগর প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এখন চলছে রঙ-তুলির কাজ। এবছর বিশেষ আকর্ষণ থাকছে পুকুরের মাঝখানে ৪০ ফুট উঁচু ভাসমান মন্দির। যেখানে সবার উপরে থাকবে শিব ঠাকুর। এরপর রামকৃষ্ণ পরমাংসদেব ও সারদা দেবি। আরও থাকবেন স্বামী বিবেকানন্দ। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা মণ্ডপের প্রতিমা দেখতে আসছেন।’
পার্শ্ববর্তী সুগন্ধি গ্রামের আরিফ ঢালী জানান, শিকদার বাড়ির দুর্গা পূজা মানে একটা অন্যরকম উৎসবের আমেজ। হিন্দু-মুসলমান ভেদাভেদ ভুলে পূজার ক’দিন সবাই মিলে তাদের সহযোগিতা করা হয়। এত বেশি সংখ্যাক প্রতিমা দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করায় হাকিমপুরের পরিচিত দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা এলকাবাসীর জন্য গৌরবের বিষয়।
আয়োজক লিটন শিকদার বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে আমি দুর্গা পূজার আয়োজন করে আসছি। প্রথম বছরে ২০১টি প্রতিমা দিয়ে শুরু হয়। স্থানীয় লোকজনের উৎসাহে দিনদিন প্রতিমার সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিবছর হাকিমপুর গ্রামে দেশের বিভিন্ন স্থানসহ দেশের বাইরের দর্শনার্থীরা দুর্গা পূজা দেখতে আসেন।’
বাঙ্গালীদের ক্ষেত্রে প্রবাদ আছে, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। এই প্রবাদকেই সত্যি প্রমাণ করতে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ এই আনন্দ উতসবে অংশ নিয়ে মেতে উঠে। এটিই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের মূলমন্ত্র।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply