ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একটি মেশিনে ধান মাড়াই করছেন।
তাদের সবার পরনে প্যান্ট, শার্ট কিংবা টি-শার্ট। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ধান মাড়াইয়ের জন্য এটি মোটেও কোন আদর্শ পোশাক নয়। খবর বিবিসির।
প্রশ্ন হচ্ছে – এই পোশাক পরিধান করে তারা কৃষকের জমির কতটুকু ধান কেটেছেন কিংবা মাড়াই করেছেন? এ ধরণের পোশাক পরে সত্যিই কি ধান কাটা সম্ভব? এতে কৃষকের আদৌ কোন লাভ হয়েছে?
ফেসবুকে এখন এসব প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
টাঙ্গাইলের কালিহাতির এক কৃষক পাকা ধান ঘরে তুলতে না পারার ক্ষোভ এবং হতাশায় ফসলের মাঠে আগুন দিয়েছিলেন সপ্তাহ তিনেক আগে।
এরপর সেই কৃষকের ধান কেটে দেন স্থানীয় কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
তখন থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ধান কাটা এবং সেটির প্রচারণা করার প্রবণতা বাড়তে থাকে।
পুলিশের ধান কাটা নিয়ে ফেসবুকে দুই ধরণের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ সদস্যরা সবুজ ধান কাটছেন। আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তারা পাকা ধান কাটছেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আব্দুল আলিম মাহমুদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আমি একজন কৃষিবিদ। আমি কি কাঁচা ধান কাটার জন্য বলবো?”
পুলিশের কাজ ধান কাটা কি-না সে প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।
ফেসবুকে কবির হোসেন নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, “কৃষকের সমস্যা ন্যায্যমূল্য নিয়ে, শ্রমিক নিয়ে না।”
ইত্তেহাদ ফেরদৌস সজিব লিখেছেন, “দেশ আগাইছে বুঝা যায়, এখন ঘড়ি জুতা পইরা বন্দুক লইয়া ধান কাটতে যায়।”
কিন্তু রংপুরের পুলিশ কমিশনার বলছেন, দরিদ্র কৃষককে সাহায্য করার জন্য পুলিশ সদস্যরা ধান কাটার কাজে অংশ নিয়েছিলেন।
ছাত্রলীগের ধান কাটা
গত এক সপ্তাহ যাবত বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধান কাটার ছবি ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে।
সংগঠনটির তরফ থেকে এক বিবৃতির মাধ্যমে কৃষকদের সহায়তা করার জন্য তাদের সদস্যদের প্রতি আহবান জানানো হয়।
কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে সমালোচনা করছেন যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধান কাটার চেয়ে ছবি তুল ফেসবুকে দেয়ায় বেশি সক্রিয়।
কামাল হোসেন লিখেছেন, “ভণ্ডামির একটা সীমা থাকা উচিত। এইসব না করে ধান এবং চালের দামের বৈষম্য কমাতে বলেন।”
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ফেসবুক পেজ থেকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করা হলে সেখানে নুসরাত জাহান সুইটি নামে একজন কমেন্ট করেছেন: “সাবাস টাকার বদলে কামলা কয়জনের ধান কেটেছেন এবং এটা শুধু আজকের জন্য নাকি সারাজীবন নাকি শুধু লোক দেখানো নাটক”।
তবে ছাত্রলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এস এম মাসুদুর রহমান দাবি করেন, তাদের কার্যক্রমের সাথে ছবি তুলে মানুষকে দেখানোর কোন সম্পর্ক নেই।
“একটা কাজ করলে কিছু লোক সেটাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করবে। এটা ঠিক না। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কৃষকরা আমার মোবাইলে ফোন করে ধন্যবাদ দিচ্ছে,” বলছিলেন মি: রহমান।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply