কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় এক প্রসূতির গর্ভের সন্তানকে দ্বি-খণ্ডিত করে ফেলা হয়। তদন্তে দুইজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছে হাই কোর্ট।
এই তদন্ত কমিটির দুই সদস্যের একজন হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি বিভাগের প্রধান; অন্যজন জাতীয় অধ্যাপক শায়লা খাতুন। আগামী সাত দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন, কুমিল্লা মেডিকেলের পরিচালকসহ অস্ত্রোপচারকারী পাঁচ চিকিৎসক বুধবার আদালতের তলবে হাজির হলে তাদের ব্যাখ্যা শুনে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
ভুক্তভোগী নারীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী শেগুফতা তাবাসসুম। আর চিকিৎসকদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু আদালতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের করা একটি তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন।যেখানে বলা হয়, গর্ভের শিশুর মাথা আটকে যাওয়ায় এবং প্রসূতির জীবন রক্ষার স্বার্থেই চিকিৎসকরা ওই পদক্ষেপ নেন।
তবে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী শেগুফতা তাবাসসুম আদালতে বলেন, অস্ত্রোপচারের আগে করা এক আল্ট্রাসনোগ্রামে গর্ভের শিশুকে স্বাভাবিক অবস্থায় দেখা গিয়েছিল।
তার বক্তব্য শোনার পর বিচারক বলেন, “এ কারণেই আমরা চাইছি বাইরের কাউকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত হোক।”এরপর আদালত দুই সদস্য বিশিষ্ট ওই তদন্ত কমিটি করে দেয়।
‘সিজারকালে ডাক্তার দুই খণ্ড করলেন নবজাতককে’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, কুমিল্লায় এবার প্রসূতির পেটে নবজাতকের মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। একইসঙ্গে ওই প্রসূতির জরায়ু কেটে অপারেশন করা হয়েছে।
জুলেখা বেগম নামের ওই নারী সন্তান ও নিজের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হারিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শয্যায় কাতরাচ্ছেন বলে জানানো হয় ওই প্রতিবেদনে।
ঘটনার বিবরণে সেখানে বলা হয়, মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের সফিক কাজীর স্ত্রী জুলেখা বেগম (৩০) প্রসব বেদনা নিয়ে ১৭ মার্চ রাতে কুমিল্লা মেডিকেলে ভর্তি হন। পরদিন তার অস্ত্রোপচার হয়। তখন নবজাতকের মাথা বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি জুলেখার জরায়ু কেটে ফেলা হয় বলে তার স্বামীর অভিযোগ।
প্রসূতির জীবন বাঁচাতেই তারা নবজাতকের মাথা বিচ্ছিন্ন করে বের করার পাশাপাশি জরায়ু কেটে ফেলতে হয়। এতে ডাক্তারদের অবহেলা ছিল না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহারিচালক, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, কুমিল্লার সিভিল সার্জন, মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের পরিচালক, অস্ত্রোপচারে নেতৃত্বদানকারী চিকিৎসক কুমিল্লা মেডিকেলের গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান করুণা রানী কর্মকারসহ অস্ত্রোপচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
ওই আদেশ অনুসারে কুমিল্লার সিভিল সার্জন আব্দুল মজিদ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. স্বপন কুমার অধিকারী, গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. করুনা রানী কর্মকার, ডা. নাসরিন আক্তার পপি, ডা. জানিবুল হক, ডা. দিলরুবা শারমিন ও ডা. আয়েশা আফরোজ বুধবার আদালতে হাজির হন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply