গত ২৪ এপ্রিল শাহ আলী এলাকা থেকে নিয়ামুল নামের এক তরুণ অপহূত হন। সম্প্রতি নিয়ামুলের মুক্তিপণ বাবদ মোবাইল ফোনে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের টিম প্রযুক্তির সহায়তায় মুক্তিপণ দাবিকারী হিসেবে আসলামকে শনাক্ত করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত শনিবার গাজীপুর এলাকা থেকে আটক করা হয় আসলাম, তাঁর স্ত্রী রিপা ও শ্বশুর আলালকে। আসলাম অপহৃত যুবকের চাচাতো বোনের স্বামী।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে মারা যাওয়া মোহাম্মদ আসলামের (৪৫) লাশ দাফনের জন্য নিয়ে গেছে স্বজনরা। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ভাই আব্দুর রশিদের কাছে অনেকটা গোপনে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, ‘অপহরণ মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে আসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকরাই বলতে পারবেন কী কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁকে নির্যাতন করা হয়নি। পুলিশ কাউকে মারার জন্য গ্রেপ্তার করে না। কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হলে মানবিক আচরণ করা হয়। অপহৃত নিয়ামুলকে এখনো উদ্ধার করা যায়নি। আমরা সেটিই চেষ্টা করছি।’
এদিকে একটি অপহরণ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে তাঁর স্ত্রী ও শ্বশুরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ডিবি হেফাজতে।সূত্র জানায়, আসলামকে গত শনিবার রাতে আটক করা হয়েছিল নিয়ামুল নামে তাঁর এক নিকট আত্মীয়কে অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগে। শনিবার রাত থেকে টানা জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভোরের দিকে পেটে ব্যথা শুরু হয়। হার্নিয়ার সমস্যাও ছিল তাঁর। ওই অবস্থায় সকাল ১০টায় তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসার একপর্যায়ে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে। সন্ধ্যায় তাঁকে ফের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ওই সময় আসলাম ‘বমি’ করার পরপরই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পরই চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছিল আসলামের লাশ। সেখানে দুই পায়েসহ শরীরে রক্তজমাট ক্ষত দেখা যায়।
গণমাধ্যমকর্মীরা এসব বিষয়ে প্রশ্ন করলে ডিবি কর্মকর্তারা নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মর্গে লাশ গ্রহণের সময় ভাই আব্দুর রশিদকে ঘিরে রেখেছিলেন ডিবির সদস্যরা।
তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছে। মেডিক্যাল বোর্ড ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, মৃতের দুই পায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ভিসেরা সংরক্ষণ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply