প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী অর্থবছরের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম পরিমার্জন করা হবে।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের এক প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, পরবর্তী বছর থেকে নতুন শিক্ষাক্রমে ছাপানো বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা কার্যক্রমকে নতুনভাবে চালু করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম নতুনভাবে চালু করার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মনোযোগী করার লক্ষ্যে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকসহ ৭ হাজার সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকের জন্য ৭ দিনের বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বা শিক্ষা সফরের পরিকল্পনা রয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ বছর মেয়াদি মাস্টার্স কোর্সে অধ্যায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। এ বছর ৭ জন শিক্ষককে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট স্কটল্যান্ডে মাস্টার্স কোর্সের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। চলতি অর্থবছরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬ হাজার ৪৭৫ জন প্রধান শিক্ষককে লিডারশীপ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। শ্রেণিকক্ষে ডিজিটাল কন্টেন্টের মাধ্যমে পাঠদানের বিষয়ে ১০ হাজার শিক্ষককে আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নবনিয়োগপ্রাপ্ত ৬ হাজার ২০০ প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক এবং ১২ হাজার ৭৫০ জন সহকারী শিক্ষককে ইনডাকশন প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা মূল্যায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে ৬২ হাজার ৬৭০ জন শিক্ষককে ‘কম্পেটেন্সি বেইজড আইটেমস ডেভেলপমেন্ট, মার্কিং অ্যান্ড টেস্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মার্কার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে প্রতিবছর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক পুরস্কার প্রদান করা হয়, যা শিক্ষকদের মানোন্নয়নে ও অধিকতর দায়িত্ব নিয়ে পাঠদানে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়বস্তু বিজ্ঞান বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক স্তরে পাঠ্যপুস্তকের ব্যবহার সহজ ও আকর্ষণীয় করার জন্য ২১টি পাঠ্যপুস্তকের ‘ডিজিটাল কনটেন্ট’ তৈরি করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৫টি (চাকমা, মারমা, সাদরি, ত্রিপুরা ও গারো) ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করে শিক্ষার্থীদের নিকট বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকদের জন্য সহায়ক সামগ্রী হিসেবে শিক্ষক নির্দেশিকা ও শিক্ষক সংস্করণ প্রণয়ন করে সারা দেশে বিতরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক স্তরে বার্ষিক পাঠ পরিকল্পনা ও ক্লাস রুটিন প্রণয়ন করে স্কুল পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply