ফুটবল বিশ্বকাপে এবার চমকপ্রদ ঘটনা কম ঘটছে না। শুধু মাঠে নয়, এইসব যেন ছড়িয়ে পড়ছে মাঠের বাইরেও, সমর্থকদের মধ্যে।
ব্রাজিল আমাদের বাংলাদেশের উন্মাদনা আছে যথেষ্ট, কিন্তু আর্জেন্টিনা নিয়ে মাতামাতিই যেন তুলনামূলকভাবে বেশি। আর সেই উন্মাদনার খবর এখন দেশ-মহাদেশ পেরিয়ে পৌঁছে গেছে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলেও।
এই উন্মাদনা দেখে বিস্মিত খোদ আর্জেন্টাইনরাও। বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা দেখে তারা এতটাই বিহ্বল যে আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশনে তারা একটা পিটিশনই করে ফেলেছে। পিটিশনটির বিষয়, আর্জেন্টিনা যেন মেসি-মাচেরানোদের নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে একটা প্রীতি ম্যাচ খেলতে ঢাকায় আসে। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই তারা এটি করতে চায়।
ম্যারাডোনার সাড়া জাগানো আত্মজীবনী ‘এল ডিয়েগো’র শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রসঙ্গের সূত্র ধরে এসেছে বাংলাদেশের নাম। মূল স্প্যানিশ থেকে বইটি ইংরেজিতে অনু্বাদ করেছেন সাংবাদিক মার্সেলা মোরা আরাউজো। বইটি শুরুই হয়েছে আরাউজোর ভূমিকা দিয়ে। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘মনে আছে, বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের হয়ে কাজ করার সময় একটা প্রতিবেদন নিয়ে গবেষণা করছিলাম। সে সময় খুঁজে পেয়েছি, ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ম্যারাডোনাকে যখন নিষিদ্ধ করা হলো, একজন বাংলাদেশি সে ঘটনার জের ধরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। পরে সেটি রীতিমতো গণ–আত্মহত্যার চেষ্টায় রূপ নেয়।’
আর্জেন্টাইন ফুটবল দলকে বাংলাদেশের মানুষ যে কতটা ভালোবাসে, তার ছোট্ট একটা নমুনা এটি।
‘মুন্দো আলবিসেলেস্তে’, ‘ক্লারিন’, ‘লা নাসিওনে’র মতো আর্জেন্টিনার বড় বড় সংবাদপত্র মেসিদের নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মাতামাতির ওপর কয়েকটা প্রতিবেদন করেছে। সেই প্রতিবেদনগুলোর মাধ্যমেই হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশের মানুষ যে মেসিদের কতটা ভালোবাসে, সেটি জেনেছেন আর্জেন্টাইনরা। রীতিমতো মুগ্ধ তাঁরা।
পিটিশনটিতে ২ হাজার ৫০০ মানুষ সই দিলেই আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশনের কাছে তা জমা দেওয়া হবে। ফেডারেশনের প্রধান ক্লদিও তাপিয়াকে অনুরোধ জানানো হবে, বাংলাদেশের সঙ্গে আর্জেন্টিনার একটি প্রীতি ম্যাচ যেন আয়োজিত হয়। খবরে প্রকাশ, পিটিশনে ১ হাজার ৮০০ জন এরই মধ্যে সই দিয়ে ফেলেছেন।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের মাটিতে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল আর্জেন্টিনা। মেসি, আগুয়েরো, হিগুয়েইন, অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, রোমেরোরা খেলেছিলেন জন ওবি মিকেলদের নাইজেরিয়ার সঙ্গে।
সত্যিই যদি খোদ আর্জেন্টিনা বাংলাদেশের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলতে আসে, তবে এটি হবে আমাদের দেশের জন্যে খুবই গর্বের একটি বিষয়। সেই সঙ্গে উৎসাহ পাবে আমাদের ঝিমিয়ে পড়া ফুটবল ফেডারেশন এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্তরা।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply