দুপুরের রোদ অনেকটাই মরে এসেছে। ফাল্গুনী নরম বিকেল নামছে। না শীত, না গরম পরিবেশ। মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে সুন্দর সব পোশাক গায়ে। তরুণী অধিকাংশেরই মাথা ভর্তি ভিন্ন রঙের সুন্দর সব ফুল।
বাংলা একাডেমীর আশেপাশে এই উৎসব মুখর পরিবেশ যে কাওকে মুগ্ধ করবে অনায়াসেই। মুগ্ধতার মাত্রা আরো একটু বাড়াতে হলে, আপনাকে প্রবেশ করতে হবে বইমেলায়। অগুনতি বইয়ের স্টল, তাতে হাজার হাজার নানা রঙ, নানা স্বাদের বই দেখে আপনার মনে হবে- এ বইয়ের রাজ্যে কোন বইটা রেখে কোনটা নেবেন!
এবার বইমেলায় তুলনামূলক ভীড় বেশি, অন্যবারের চেয়ে। ভীড় অনুযায়ী বেচা-কেনা যতোটা হবার কথা, ঠিক ততটা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থা। তবে ছুটির দিন গুলোতে বিকি-কিনি বেশ ভাল হচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেছেন। শুক্রবার, ছুটির দিন বলে বেশ ভিড় হয়, আশানুরূপ হয় বই বিক্রি। অন্যদিন গুলোতে বিকেল তিনটে থেকে হলেও, ছুটির দিন শুক্রবার মেলা প্রাঙ্গণ খুলে দেয়া হয় বেলা এগারোটায়।
এবার ক্রেতারা অনেকেই নবীন, তরুণ লেখকদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এটি নিঃসন্দেহে আশার কথা। নবীন লেখকদের বই পাঠক যতো পড়বেন, তাঁরা উৎসাহ পাবেন নতুন কিছু লিখতে, ভাবতে। গত বৃহস্পতিবার তরুণ লেখকদের বইয়ের চাহিদা ছিল উল্লেখ করবার মতো। সাদাত হোসাইনের উপন্যাসগুলো এক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে।
ভাষাচিত্র থেকে প্রকাশ করা হয়েছে তাঁর সর্বমোট আটটি উপন্যাস। প্রতিদিনই এই স্টলে দেখা যায় পাঠকের আনাগোনা। এবার বইমেলায় তাঁর নতুন উপন্যাস ‘নিঃসঙ্গ নক্ষত্র’ প্রকাশ করেছে ভাষাচিত্র। এছাড়া প্রতিষ্ঠিত লেখকদের মধ্যে সৈয়দ শামসুল হকের ‘নদী কারো নয়’ প্রকাশ করেছে অন্যপ্রকাশ। ঐতিহ্য এনেছে মনজুরুল হকের ‘পূর্ব বাংলার সাত দশকের কমিউনিস্ট রাজনীতি।’
টেন মিনিট স্কুল এর প্রতিষ্ঠাতা, তরুণ লেখক আয়মান সাদিকের একটা বই এনেছে অধ্যয়ন প্রকাশন। বইটির নাম ‘নেভার স্টপ লার্নিং।’ এর মোড়ক উন্মোচনে ভীড় লক্ষ্য করা যায় স্টলটিতে। মেলায় ঘুরে অজস্র বই দেখতে দেখতে সময় কেটে যায়। পশ্চিমা আকাশ লাল করে সূর্য ঢলে পড়তে শুরু করে। একসময় হারিয়ে যায় অসংখ্য স্টলের ওপাশে। ক্রেতারা তখনো আগ্রহ নিয়ে বইয়ের স্টলে স্টলে দাঁড়ান, বই নেড়েচেড়ে দেখেন। পছন্দসই হলে কিনে নেন।
এই আগ্রহটা হারিয়ে যেতে দেয়া যাবে না। বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে নতুন প্রজন্মকে। জ্ঞান-শিক্ষার ভিত্তি তবেই আরো পাকাপোক্ত হয়ে গড়ে উঠবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস
Leave a Reply