ঋতুচক্রের সময়ে মালিকের নানা গঞ্জনা শুনতে হয়, বেতন কাটা যায়। জরিমানা করা হয়। তাই পেটের দায়ে, অভাবের তাড়নায় অপারেশন করে জরায়ু ফেলে দিচ্ছেন ভারতের হাজার হাজার দরিদ্র নারী শ্রমিক। তাদের বেশির ভাগেরই বয়স ২০ থেকে ২২ এর মধ্যে। তাদের অনেকেই দুই বা ততোধিক সন্তানের মা।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, কোটি কোটি গরিব মানুষ ভারতে। যেসব পরিবারে নারী পুরুষ উভয়েই কাজ করে, দিনমজুর হিসেবে শিল্প বা কৃষি খাতে।
সাম্প্রতিক সময়ে যে ঘটনাগুলো আলোড়ন তুলেছে, তার একটি মহারাষ্ট্রে। হাজার হাজার তরুণী স্বেচ্ছায় জরায়ু কেটে ফেলছেন হাসপাতালে গিয়ে। এর ফলে কিছু গ্রাম এখন জরায়ুহীন নারীদের গ্রাম হিসেবে পরিচিত হয়ে গেছে। যারা এই অপারেশন করিয়ে নিচ্ছেন, তারা কৃষি শ্রমিক। ক্ষেত থেকে আখ কাটেন। মহারাষ্ট্র ভারতে আখের উর্বর ক্ষেত্র। বছরে ৬ মাস এসব আখ খেতে কাজ করতে আসেন হাজার হাজার শ্রমিক। এই নারী-পুরুষরা একটানা ছয় মাস আখ কাটার কাজ করেন।
এ ছাড়া তামিলনাড়ু রাজ্যে গার্মেন্টস কারখানায় অনেক মেয়ে কাজ করে। পিরিয়ডের সময় কাহিল লাগে অনেকের, অনেকের পেইন হয়, সে ক্ষেত্রে তাদের যেখানে এক বা দুদিন ছুটি দেয়া উচিত, তা দূরে থাক, উল্টো ব্যথা কমানোর জন্য নাম না জানা ওষুধ খেতে দেয়। ফলে তারা জরায়ু কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন।
গত মাসে মহারাষ্ট্রের রাজ্যসভায় নারীদের এই অবমাননাসূচক শারীরিক ক্ষতির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন বিধায়ক নীলম ঘোরে। তার কথার সঙ্গে একমত হন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধে। মন্ত্রী জানান, ৩ বছরে বীদ জেলায় চার হাজার ৬০৫টি হাইসটেরেকটমি সার্জারি হয়েছে। এ সার্জারিতে অনেক সময় নারীর প্রজননতন্ত্রের প্রায় সব কিছুই কেটে ফেলা হয়।
যদিও মন্ত্রী বলেন, সব অপারেশন আখ শ্রমিক নারীদের করা হয়েছে, তা নয়। তবে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একটি তদন্ত কমিটি করার ঘোষণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
খবরে বলা হয়, এই অপারেশন নারীর শরীরে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। সার্জারি করা নারীরা শরীরে ব্যথাবেদনা, শক্তিহীনতাসহ অনেক সমস্যায় ভোগেন। খুব দ্রুত বুড়িয়ে যান, কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply