ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারী আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় প্রতিষ্ঠাটির অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও শাখাপ্রধান জিন্নাত আখতারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কাজী কামরুল ইসলাম ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে অপর আসামি শ্রেণিশিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী রাজধানীর পল্টন থানায় মামলাটি করেন।
শ্রণিশিক্ষিকা হাসনা হেনা গত ৫ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হয়ে চার দিন কারাভোগের পর গত ৯ ডিসেম্বর জামিন পান। পলাতক থাকা অপর দুজন গত ১৪ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলায় বলা হয়, অরিত্রী অধিকারী (১৪) ভিকারুনসিনা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী অরিত্রী গত ২ ডিসেম্বর পরীক্ষা দিতে স্কুলে যায়। পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষিকা আফসানা তার কাছে মোবাইল ফোন পেয়ে তা নিয়ে নেন এবং পরদিন বাবা-মাকে নিয়ে আসতে বলেন। পরদিন অরিত্রীকে নিয়ে বাবা-মা সকাল ১১টায় স্কুলে যান। স্কুলে গিয়ে প্রথমে শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনার কাছে গেলে তিনি তাদের অনেক সময় বসিয়ে রাখেন এবং পরে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও শাখাপ্রধান জিন্নাত আখতারের কাছে নিয়ে যান।
সেখানে জিন্নাত আখতার তাদের দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং বাদীর মেয়েকে টিসি দেবেন বলে হুমকি দেন। তখন তারা অরিত্রীকে নিয়ে অধ্যক্ষ আসামি নাজনীন ফেরদৌসের রুমে গিয়ে দেখা করেন। ওই সময় অরিত্রী তার পা ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করে। বাদী ও তার স্ত্রী মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তারাও ক্ষমা চান। কিন্তু আসামি কোনো কর্ণপাত করেননি।
একটু পরে বাদী ও তার স্ত্রী লক্ষ করেন মেয়ে অরিত্রী রুমে নেই। তারা বাইরে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে বাসায় গিয়ে তাকে রুমে দেখতে পান। এরপর বাদী কাজে চলে যান। কিছু সময় পর বাদীর স্ত্রী মোবাইল ফোনে জানান, অরিত্রীর রুম বন্ধ, খুলছে না এবং সাড়াশব্দও পাওয়া যাচ্ছে না। পরে বাসার কেয়াটেকার শুখদেব বাথরুমের ভেন্টিলিটার দিয়ে রুমে প্রবেশ করে অরিত্রীকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকতে দেখতে পায়।
উপরোক্ত ঘটনায় বাদীর স্পষ্ট ধারণা যে, স্কুলের উল্লেখিত শিক্ষকদের নির্মম আচরণে মর্মাহত হয়ে অরিত্রী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply