মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর মৃত্যুর প্রায় ৭ বৎসর পর কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন একজন নারী। এ ঘটনায় নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। সিলেটের জৈন্তাপুর এ ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ডিবিরহাওর গ্রামের মৃত হায়দর আলীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ অলি আহমদ বিগত ২১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুকালে দ্বিতীয় স্ত্রীসহ ১০ জন সন্তানাদি রেখে যান।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধা অলি মিয়া মৃত্যুর ৭ বৎসর পর চলিত মাসের ৪ জুন দ্বিতীয় স্ত্রী আলেয়া বেগম উরফে আলফা বেগম একটি কন্যা সন্তান জন্মদেন। মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর প্রায় ৭ বৎসর পর কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে মুক্তিযোদ্ধার দুই পরিবার সহ এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। উপজেলা জুড়ে এ ঘটনা নিয়ে চলে আলোচনা ও সমালোচনা।
সরেজমিনে অলি মিয়ার ছেলে নুরুল হক, আজিজুল হক, ময়জুল হক, আয়নুল হকসহ অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, আমাদের পিতা মারা যাওয়ার বেশ কয়েক দিন পর আমাদের সৎ মা আলেয়া বেগমকে আমমোক্তার নিয়োগ করি। পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাদী ভোগ করে আসছি।
প্রায় তিন বৎসর পূর্বে আমাদের সৎ মা ও আমাদের এক সৎ বোন এক সৎ ভাই নিয়ে উপজেলার সারীঘাট ডৌডিক গ্রামে বসবাস করতে শুরু করে আমরাও যাওয়া আসা করি। এদিকে হঠাৎ করে লোক মাধ্যমে জানতে পারি সৎ মা উপজেলার নিজপাট গ্রামের চুনাহাটি গ্রামের মরহুম তোফাজ্জুল মিয়ার ২য় ছেলে রাজু আহমেদকে বিয়ে পূর্বক স্বামী হিসেবে গ্রহণ করে। সৎ মায়ের কাছে বিয়ের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন এবং মামলা হামলাসহ নানা ধরনের কুৎসা রটাবেন বলে হুমকী দেন। তাতে মানসম্মান আর লোক লজ্জার ভয়ে আমরা কিছু বলিনি।
কিন্তু, গত ৪ জুন মঙ্গলবার আমাদের সৎ মা একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিলে তোলপাড় দেখা দেয়, কিন্তু শিশু জন্ম দেওয়ার বিষয়টি সৎ মা অস্বীকার করে আমোদের জানান বাচ্ছাটি তিনি দত্তক নিয়েছেন। কোথায় হতে তিনি দত্তক নিয়েছেন তা বলতে অস্বীকার করেন। আমাদের দাবী সৎ মা আমাদের পিতার মুক্তিযোদ্ধের ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা গ্রহণের জন্য তিনি দ্বিতীয় বিয়ে বা স্বামী গ্রহণ এবং নিজ সন্তানের জন্মের বিষয়টি অস্বীকার করছেন।
প্রতিবেদক সরেজমিনে ডৌডিক গ্রামে গিয়ে আলেয়া বেগম উরফে আলফা বেগমের সাথে বিয়ে সন্তান বিষয়টি জানতে চাইলে প্রথমে অস্বীকার করেন। প্রশ্নের একপর্যায়ে আলেয়া বেগম স্বীকার করেন প্রায় ২ বৎসর আগে তার পরিচিত নিজপাট চুনাহাটি গ্রামের ছেলে রাজু আহমদকে বিয়ে করেন এবং নবজাতকটি রাজু আহমদের সন্তান, তবে তাদের বিয়ের রেজিষ্টি (কাবিন) করেনি।
তিনি প্রতিবেদকে বলেন, যেহেতু আমি স্বামী গ্রহণ করেছি তাই অচিরেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে তিনি আগের স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা অলি মিয়ার মুক্তিযোদ্ধার ভাতা গ্রহণ করবেন না। তবে মুক্তিযোদ্ধার ২ সন্তান যাতে ভাতা বঞ্চিত না হয় যে জন্য লিখিত আবেদন করবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এ.কে.এম আজাদ ভূইয়া সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আলোয়া বেগম যদি স্বেচ্ছায় ভাতা কার্ডটি জমা দেন তাহলে তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অথবা মুক্তিযোদ্ধার ছেলেরা উপযুক্ত প্রমাণসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে আবেদন করে তাহলে যাচাই বাছাই পূর্বক আলোয়া বেগমের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply