নিলয় ধর, যশোর প্রতিনিধি : চিকিৎসা, চিকিৎসক যন্ত্রপাতি ও জনবল সংকট সহ নানা সমস্যা জর্জরিত যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৷ সার্জারী যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতা, ওয়ার্ডে পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা রয়েছে , দুর্গন্ধযুক্ত বাথরুম, ওষুধসংকট, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের কাছ থেকে ভিজিট নেওয়া হচ্ছে, সরকারি ওষুধ চোরাই পথে বিক্রি সহ এ হাসপাতালের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। স্বাধীনতার পূর্বে (১৯৬২ খ্রীষ্টাব্দে) এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মিত হয়েছিলো। প্রায় অর্ধ শতাব্দী আগে নির্মিত এই
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর, বেনাপোলসহ, ঝিকরগাছা উপজেলার, একাংশ সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবায় নির্ভরতার প্রতীক হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সুযোগ–সুবিধা বাড়ানো হয়নি।অনেক দিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে এক্স-রে ও ইসিজি মেশিন। আর প্যাথলজি বিভাগে চলছে অনিয়ম
দুর্নীতি । ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়া , নিম্নমানের খাবার পরিবেশন ও অপরিছন্ন পরিবেশে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অসহায় দরিদ্র রোগীরা । যথেষ্ট জনবলের অভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে। হাসপাতালে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, অ্যানেসথেসিয়া, গাইনি, সার্জারি, চক্ষু, শিশুসহ কোনও কনসালট্যান্ট নেই এই কমপ্লেক্সে। কমপ্লেক্সে চক্ষু, শিশুসহ কোনও কনসালট্যান্ট নেই। ৩২ জন চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছে মাত্র ৪ জন। এর মধ্যে একজন
মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণির ১১৯ জন কর্মচারীর মধ্যে রয়েছেন ৫৪ জন। স্বল্প জনবল দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক ও নার্সরা। চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে আসা রোগীদের ও স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে ঠিকমতো ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। এক্স-রে ও ইসিজি মেশিন বিকল হয়ে রযেছে । তা দিয়ে কোনো কাজ হয়
না। প্যাথলজি বিভাগে চলছে অনিয়ম-দুর্নীতি। ফলে রোগীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। ভর্তি রোগীদের দেওয়া হচ্ছে নিম্নমানের খাবার। দূর-দূরান্ত থেকে সেবার জন্য এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ডাক্তার খুঁজে পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে ছুটে যেতে হয় তাদের যশোর জেলা সদরে। কমপ্লেক্সের টেকনিশিয়ান হুমায়ুন কবীর অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই সব রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। হাসপাতালের কোনও ওষুধ বাইরে বিক্রি হয় না বা কেউ এ কাজ করে না বলে দাবি করেছেন।
এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. অশোক কুমার সাহা জানান , উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও লোকবল বাড়ানো হয়নি। প্রতিদিন আন্তর্বিভাগ, বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন মাত্র একজন ডাক্তার মিলে।, তারপরেও কেউ থাকে, কেউ থাকে না। স্বল্প জনবল দিয়ে উপজেলার সাড়ে ৩ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে শূন্য পদগুলো পূরণ হলে সঠিকভাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন ।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply