নিয়ামতুল্লাহ্ ইমন, জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার সবত্রই মাঠ থেকে সোনালী ফসল ইরি-বোরো ধান ঘরে তোলার ধুম। ফলে চলতি বোরো মৌসুমের ধান কাটা ও মাড়াই শেষে গোলায় তুলতে এখন ব্যস্ত কৃষক কৃষানীরা। কিন্তুু শ্রমিক সংকটের কারনে দিশেহারা পড়েছে কৃষক/কৃষানীরা। এক মণ ধানের দামেও মিলছে না একজন শ্রমিক। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ মাঠ গুলোতে একযোগে ধান কাটা শুরু হওয়ায় এই সংকট দেখা দিয়েছে। অপরদিকে নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৫ শ’ থেকে সাড়ে ৫’শ ’টাকা দরে।
অথচ একজন শ্রমিকের দাম হাকানো হচ্ছে সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা। কিছু কিছু এলাকাতে এ মজুরি আরও বেশি। শ্রমিকের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় ক্ষেতের ধান ঘরে তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কৃষকদের। সম্প্রতি ফণির প্রভাবে ঝড় ও বৃষ্টি হাওয়ায় মাঠের বেশির ভাগ ধান জমিতেই নুইয়ে পড়েছে। এ কারনে নুয়ে পড়া ধান কাটতে শ্রমিক তুলনামূলক বেশি লাগছে বলে কৃষকরা জানান। এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হলেও কৃষি শ্রমিকের দাম বেশী থাকায় হতাশ চাষিরা, তাদের এই হতাশা পুরো মৌসুম জুড়ে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে শ্রমিক স্বল্পতা ও অতিরিক্ত মজুরি। শ্রমিক সংকট ও মজুরির অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এক মণ ধানের বাজার মূল্য একজন শ্রমিকের দিনের পারিশ্রমিকের সমান। কিছু কিছু এলাকাতে মজুরি আরও বেশি।
উপজেলার বাঙ্গালদহ গ্রামের কৃষক মাসুদুর রহমান জানান, প্রতিবিঘা ধান কাটতে শ্রমিক মজুরী হিসাবে ৪ হাজার ৫শ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। তবুও সময়মত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। পাগলাবাজার এলাকার কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, প্রতিবছর রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার শ্রমিকরা এ এলাকায় ধান কাটতে আসলেও এবার তেমন না আসাই এবং ফণির কারনে ধানের জমির পানিতে ধান গাছ নুইয়ে পরার কারনে বেশি দাম দিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। একই কথা বলেন, শ্রীমন্তপুর গ্রামের কৃষক আলম হোসেন।
উপজেলার বাগজানা এলাকার স্থানীয় সাংবাদিক ও কৃষক প্রদীপ অধিকারী বলেন, ফণির কারনে অন্য কোন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ঝড়ো হাওয়া আর অতি বৃষ্টিতে কৃষকের সেই হলুদ বর্ণ পাকা ধান পানির তলে নুইয়ে পরায় দিন মজুরও এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। কৃষকের অভিযোগ এমনিতেই বাজারে ইরি ধানের মুল্য নেই, তার মধ্যে দিন মজুররা সুযোগ বুঝে পানিতে নুইয়ে পরা ধান বিঘা প্রতি চাহিদা ৫ হাজার টাকা, শুকনো জমির ধান প্রতি বিঘা ৪ হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত চাহিদা তার বেশি। এলাকায় দিন মজুররা সিন্ডিকেট করে এবার ধান কাটা মারা করছে বলে কৃষক জানায়। এছাড়া অধিকাংশ দরিদ্র পরিবারের লোকজন জীবিকার তাগিদে পোশাক কারখানা বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি, শহর এলাকায় রিকশা-ভ্যান, টেম্পু, অটোরিকশা চালনার কাজে যুক্ত হয়েছেন। এ পেশায় উপার্জন বেশি হওয়ায় কৃষি শ্রমিকের জীবনে বেশিরভাগ মানুষই আর ফিরে যেতে চান না। অনেকেই মুরগী খামার, মাছ চাষ, মুদি দোকান করছেন। ফলে দিনকে-দিন কমে গেছে কৃষি শ্রমিক।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply