নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, সরকারের কাছে প্রত্যাশা পূরণ হলে জনগণের ভোট দেওয়ার প্রবণতা কমে যায়। কারণ তখন আর সরকার পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে না। পৃথিবীজুড়েই মানুষের ভোট দেওয়ার প্রবণতা কমে আসছে। এর উদাহরণ হতে পারে বেলজিয়াম। সেখানে ২৫ ভাগ মানুষ ভোট দেয়। আর আমেরিকার স্থানীয় ভোটে ৩৬ ভাগ ভোট পড়ে। এছাড়া ফ্রান্সে সংবিধানের বাধ্যবাধ্যকতার কারণে শতকরা ৫০ ভাগের কম ভোট হওয়ায় সেখানে দুই দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীতে ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসি সচিব বলেন, নির্বাচন না হলে গণতন্ত্র মজবুত রাখা যাবে না, গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহতও থাকবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনের কাজ হচ্ছে একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা। আপনারা ভোটার হোন। ভোটার হলেই যে ভোট দিতে হবে, এমন নয়। পছন্দ হলে দেবেন, না হলে দেবেন না। কিন্তু ভোটার আইডি কার্ড সব সময় কাজে লাগবে। এটা জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে বিবেচিত। যা এখন সব কাজেই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
হিজড়াদের ভোটার তালিকায় আনা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবছর তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে হিজড়াদের। সবাই জাতীয় পরিচয়ের আওতায় আসলে দেশে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস কমে যাবে। এখন জঙ্গী সন্ত্রাসবাদে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে ব্যবহৃত ন্যশনাল ডাটা সেন্টারের তথ্যকে কাজে লাগানো হচ্ছে।
হেলালুদ্দীন আহমদ আরো জানান, আগামীতে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া চাকরি, পাসপোর্ট, সিমকার্ড উত্তোলন, ব্যাংকে লেনদেন সম্ভব হবে না। এখন দেশের ১০০টির মতো প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নিতে জাতীয় পরিচয়পত্র লাগছে। আগামীতে এর আওতা আরও বৃদ্ধি করা হবে। অর্থাৎ জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে শুধু ভোট প্রদানের বিষয়টি জড়িত নয়।
তিনি জানান, পৃথিবীর অনেক দেশেই ভোটার তালিকা নেই। আমাদের দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশন দেয়। এটি আমাদের জন্য বাড়তি কাজ। অন্য কোন দেশে এই প্রতিষ্ঠান জাতীয় পরিচয়পত্র দেয় না। তারা শুধু ভোটারদের তালিকা করে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি ও পরিবেশ তৈরি করে দেয়।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী আঞ্চালিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ কর্মসূচি শুরু হলো। প্রথম ধাপে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) এলাকায় তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। এটি আগামী ১৩ মে পর্যন্ত চলবে। এরপর উপজেলা পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। তথ্য সংগ্রহের কাজে ১৯৩ জন সুপারভাইজার কাজ করছেন।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর উর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নিশারুল আরিফ, রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সুজায়েতুল ইসলাম, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম, জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমান।
Leave a Reply