গত বছরের ২৮ মার্চ ঘটা নারী নির্যাতন ঘটনায় আটক করা হয় আপন জুয়েলারসের মালিকের ছেলের বন্ধু সাদমান সাকিফকে।
এবার সাদমান সাকিফের জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মোঃ সফিউল আজম আসামি পক্ষের জামিন শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী তানভীর আহমেদ এই তথ্য জানান। এদিন রেইনট্রি হোটেলের দুই কর্মচারী আকবর হোসেন ও জেবিআর রোজারিও আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এরপর মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী জানান, গত ১৪ মার্চ এ মামলার আসামি বিল্লাল হোসেনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। তিনি জানান, বর্তমানে এ মামলার বাদীসহ তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো। গত বছরের ১৬ অক্টোবর মামলাটিতে বাদীপক্ষের সাক্ষ্য দেয়া শুরু হয়। সাক্ষ্যগ্রহণের সময় কারাগারে থাকা আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজন আদালতে হাজির ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট এ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করেন। ওই বছর ১৯ জুন একই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
অভিযোগপত্রে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। অন্য আসামি সাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তার বান্ধবীকে আটকে রাখে। এরপর অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাদী ও তার বান্ধবীকে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ ও তার বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, আসামি সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তার মাধ্যমেই ওই ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই ছাত্রীর পরিচয় হয়। ওই দুই ছাত্রী সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডে রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যায়। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তার বান্ধবী জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটি বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে।
সেখানে যাওয়ার পর তারা কোন ভদ্রলোককে দেখেননি। সেখানে আরও দুই তরুণী ছিল। বাদী ও তার বান্ধবী দেখেন সাফাত ও নাঈম ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভাল না লাগায় তারা চলে যেতে চান। এই সময় আসামিরা তাদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেন। তাকে খুব মারধর করেন। ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালককে ভিডিওচিত্র ধারণ করতে বলেন। বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply