হযরত শাহজালাল (রঃ) আর শাহপরাণ (রঃ) এর স্মৃতিধন্য সুরমা তীরের শহর সিলেট। ছোট্ট এই শহরে আছে দর্শনীয় অনেক জায়গা।
শহর সিলেটের কিছু ভ্রমণস্থান দেখুন আজকের প্রতিবেদনে।
হযরত শাহজালাল (রঃ) এর মাজার
সিলেট শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। সুলতান শামসুদ্দীন ফিরোজ শাহের শাসনকালে ১৩০৩ সালে হযরত শাহজালালের হাতে এ অঞ্চল বিজিত হয়। সে সময়ে তুরষ্কের কুনিয়া শহর থেকে তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ৩১৩ জন শিষ্যসহ এদেশে আসেন। ১৩৪০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করলে তাঁকে এখানেই সমাহিত করা হয়। মাজার কমপ্লেক্সের ভেতরে শত শত জালালী-কবুতর, পুকুর ভর্তি গজার মাছ ছাড়াও হযরত শাহজালালের ব্যবহৃত তলোয়ার রক্ষিত আছে। হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে প্রাচীন মসজিদ। বিভিন্ন সময়ে সংস্কারের ফলে মসজিদটি বর্তমানে আধুনিক রূপ নিলেও এটি সর্বপ্রথম নির্মাণ হয়েছিল ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দে।
হযরত শাহপরাণ (রঃ) এর মাজার
হযরত শাহপরাণ ছিলেন হযরত শাহজালালের ভাগ্নে। তিনিও ছিলেন একজন সাধক পুরুষ। শহরের পূর্ব দিকটায় দক্ষিণগাছের খাদিমপাড়ায় এই মাজার অবস্থিত। বিশাল বটগাছের ছায়াতলে এ মাজার। প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তের পদচারণায় মুখরিত থাকে পুরো মাজার এলাকা।
লাক্কাতুরা চা-বাগান
সিলেট শহর থেকে বিমানবন্দর যেতে পথেই লাক্কাতুরা চা-বাগান। ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন এই চা-বাগান খুবই সুন্দর।
মালনিছড়া চা-বাগান
বিমানবন্দর সড়কেই আরেক চা-বাগান মালনিছড়া। এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরানো চা-বাগান। ১৮৫৪ সালে ইংরেজ হার্ডসনের হাত ধরে যাত্রা শুরু এ বাগানের। টিলা ঘেরা এ চা-বাগানের ভেতরটা ছবির মতো সাজানো। প্রচুর বানর আছে এ বাগানে।
ক্বিন ব্রিজ
সিলেট শহরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বাংলাদেশের অন্যতম নদী সুরমা। শহরের চাঁদনী ঘাট থেকে সুরমা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। নদীর উপরে সেতুটি সুরমা সেতু নামেও এটি বেশ পরিচিত। লোহার তৈরি এ সেতুটি ১৯৩৬ সালে নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন ইংরেজ গভর্নর মাইকেল ক্বিনের নামে এর নামকরণ। ১১৫০ ফুট লম্বা এবং ১৮ ফুট প্রস্থ এ সেতুটি দেখতে ধনুকের মতো বাঁকানো। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী ব্রিজটির একাংশ উড়িয়ে দেয়। পরে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের অর্থায়নে বিধ্বস্ত অংশটি পুনঃনির্মাণ করা হয়।
আলী আমজদের ঘড়িঘর
ক্বিন ব্রিজের উত্তর পাড়ে সুরমা নদীর তীরের চাঁদনীঘাটে প্রাচীন ঘড়িঘর। এটি নির্মাণ করেছিলেন সিলেটের কুলাউড়ার পৃত্থিমপাশার জমিদার আলী আমজদ খান। দিল্লির চাঁদনীচকে শাহজাদী জাহানারা কর্তৃক নির্মিত ঘড়িঘর দেখে মুগ্ধ হয়ে তিনি এটি তৈরি করেছিলেন বলে কথিত আছে।
শুকতারা প্রকৃতি নিবাস
সিলেটের খাদিমনগরের উদ্দীনের টিলায় সবুজে ঘেরা প্রায় ৭ একর জায়গা জুড়ে সবুজ এক স্বর্গ শুকতারা প্রকৃতি নিবাস। সিলেট ভ্রমণে থাকার জন্য এ জায়গাটি উৎকৃষ্ট।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ / কাউসার।
Leave a Reply