সুবর্ণচরে নির্যাতনের শিকার নারীর অভিযোগ, তিনি গত রোববার ভোটের দিন সকালে এলাকার একটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যান। এ সময় কেন্দ্রে থাকা আওয়ামী লীগের কয়েকজন যুবক তাঁকে তাঁদের পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে বলেন। তিনি তাতে রাজি না হলে যুবকেরা তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। ওই দিন রাত ১২টার দিকে ছালা উদ্দিন, সোহেল, বেচু, মোশারফসহ ১০ থেকে ১২ জনের একদল যুবক ঘরে ঢুকে প্রথমে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে মারধর করেন। পরে স্বামী ও সন্তানদের বেঁধে রেখে ওই নারীকে ঘরের বাইরে পুকুরপাড়ে এনে গণধর্ষণ করেন।
সেই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার পর গণধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. খলিল উল্যাহ। স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে ওই নারীকে (৪০) গণধর্ষণ করা হয়। মো. খলিল উল্যাহ বলেন, এখন প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে। বিকেল নাগাদ তা চূড়ান্ত হবে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক গতকাল বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষাকালে নির্যাতনের শিকার শরীর থেকে সংগ্রহ করা আলামত পরীক্ষার জন্য গতকাল আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়।
এই নারীর দাবি, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা সবাই একই এলাকার চর জুবলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য রুহুল আমিনের লোক। আসামিরা কে কোথায় আছে—রুহুল আমিন সবই জানেন।
পুলিশ এ ঘটনার ইন্ধনদাতা হিসেবে রুহুল আমিনসহ এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সুবর্ণচরের চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন জানান, গতকাল রাতে রুহুল আমিনকে সুবর্ণচরের উত্তর ওয়াপদা এলাকার একটি মাছের খামার থেকে, আর মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি মো. বেচুকে সেনবাগ উপজেলার কেশাপাড় গ্রামের একটি ইটভাটা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার করা অপর তিনজন হলেন প্রধান আসামি মো. সোহেল (৪০), মো. স্বপন (৩৫) ও বাদশা আলম ওরফে কুড়াইল্যা বাসু (৪০)।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী (৪০) বর্তমানে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গতকাল দুপুরে হাসপাতালে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সারা শরীরে নির্যাতনের জায়গাগুলোতে রক্ত জমে কালো হয়ে গেছে। ব্যথার কারণে তিনি নড়াচড়া করতে পারছেন না।
ওসি নিজাম উদ্দিন আজ বৃহস্পতিবার সকালে জানান, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা প্রাথমিকভাবে গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তার হওয়া আসামি বাদশা আলমের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।
নির্বাচনকে ঘিরে এমন নির্যাতনের ঘটনা আওয়ামীলীগের জন্য লজ্জাজনক। শীঘ্রই এতে যে দলের বা গোষ্ঠীর লোকই জড়িত থাকুক না কেন, দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা উচিৎ।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply