প্রাচীনকাল থেকেই ঘরোয়া ওষুধ হিসেবে হলুদ বা হরিদ্রা ব্যবহার করা হয়ে আসছে। প্রতিদিনের ডাল-তরকারি-ছেঁচকি-শাকে হলুদ রং আনতে রান্নায় হলুদ ব্যবহার করা হয়। হলুদ দিলে শুধু রং নয় খাবারের স্বাদও একটু বাড়ে।
হলুদের আরও নাম -; হলুদ বলবৃদ্ধি করে, রক্ত পরিষ্কার করে, পিত্ত নাশ করে ও দাহ নিবারন করে। এই সব গুণ প্রকাশ করবার জন্যেই হলুদের আরও কয়েকটি নাম আছে সংস্কৃত ভাষায়-কাঞ্চণী(সোনার মতো রং সেইজন্যে), পীত (পীতবর্ণ বলে), বর্ণবতী (রং সুন্দর বলে), বরবর্ণিনী(মেয়েদের শীরের লাবণ্য বিকশিত হয়) ও যোষিৎপ্রিয়া।
কফ, বাত, পিত্ত(ত্রিদোষ), রক্তদোষ, কুষ্ঠ, ব্রণ, ত্বকের রোগ, শোথ, কৃমি, প্রমেহ, অরুচি ও বিষদোষ উপশম করে। উদর পেটের রোগ উদরী রোগ পেটে জল ভরা নিবারণ করে।
সুস্থ থাকতে হলুদের প্রয়োগঃ
১। আঘাত লাগলে বা মচকে গেলে চুন-হলুদ লাগালে উপকার পাওয়া যায়। ব্যথা ও ফুলা কমে।
২। হলদ আগুনে পুড়িয়ে সেই ধোঁয়া নাকে শুঁকলে সর্দি শ্লেষ্মা বেরিয়ে যায়।
৩। হলুদ দুধে সেদ্ধ করে বেটে চিনি মিশিয়ে খেলে সর্দি সারে।
৪। হলদু পিষে আমলকির সঙ্গে খেলে প্রমেহ যৌনব্যাধি উপশম হয়।
৫। হলুদ খেলে শরীরের ভেতরের সব পোকা নষ্ট হয়।
৬। কাঁচা হলুদ বাটা ও গুড় মিশিয়ে খাওয়ালে বাচ্চাদের কৃমি রোগ সারে।
৭। চর্মরেোগ কমলা জন্ডিস ও বহুমূত্র রোগে ডায়বেটিস হলুদ বিশেষ উপকারী।
৮। হলুদ সংক্রামক রোগের জীবাণু নষ্ট করে। কলেরা ও বসন্ত রোগে উপকারী। কাঁচা হলুদ ও তেঁতুল পাতার রস ঠাণ্ডা জলে মিশিয়ে খেলে বসন্ত রোগ সারে।
৯। বসন্তকালে অর্থাৎ মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে হলুদের রস মধুসহ সেবন করলে কলেরা, বসন্ত, জলবসন্ত, পেটের অসুখ হওয়ার আশষ্কা কমে।
১০। লিভারের দুর্বলতা, কোষ্ঠবদ্ধতা, রক্তাল্পতা, হজম শক্তির দুর্বলতা, পুরোনো কাশি, কুরোনো ঘুসঘুসে জ্বরে মধুসহ হলুদ খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
১১। সরিষার তেলের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে প্রলেপ দিলে গরম সারে।
১২। গায়ে হলুদ মেখে স্নান করলে শরীরে লাবণ্য ফুটে ওঠে সেইজন্যে বিয়ের আগে গায়ে হলুদের প্রথা
আর একটি নাম বরবর্ণিনী।
১৩। নাকের ভেতরের ক্ষতে হলুদের গুঁড়ো মহৌষধ।
১৪। হাকিমি মতে প্রমেহ রোগে কাঁচা হলুদ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১৫। গরম দুধে হলুদ ও গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে ঠাণ্ডা লাগার জন্যে যে জ্বর আসে তা কমে।
১৬। গরম দুধে এক চিমটি হলুদ দিয়ে রাত্রে পান করলে স্বরভঙ্গ হলে উপকারী পাওয়া যায় এবং গলা বসে যাওয়া বা বসে যাওয়া গলার আওয়াজ ঠিক হয়।
১৭। হলুদ আর দুধ গরম করে তাতে একটু নুন ও গুড় মিশিয়ে খাওয়ালে বাচ্চাদের সর্দি, কফ ও নানারকম অসুখ সারে।
১৮। হলুদের একটা টুকরো সেঁকে মুখে রাখলে সর্দি, কফ আর কাশিতে উপকার হয়। ভয়ন্কর কাশি সারে।
১৯। হলুদের গাঁঠ পিষে, ঘিয়ে ভেজে, চিনি মিশিয়ে কিছুদিন রোজ নিয়মিত খেলে মধুমেহ ডায়বেটিস ও প্রমেহ যৌনব্যাধি সারে।
২০। একটু হলুদ গুঁড়ো তার দুগুণ পরিমাণ দইয়ে মিশিয়ে খেলে পিলের রোগ, জনডিস, যকৃৎ বিকার লিভার খারাপ হওয়া উপশম হয়।
২১। গরুর দুধের পাতা দইয়ের টাটকা ঘোলে একটু হলুদ মিশিয়ে সকাল, সন্ধ্যা খেলে এক সপ্তাহের মধ্যে পিলের রোগ সারে যায় বলা হয়ে থাকে।
২২। হলুদে চিনি জল মিশিয়ে খাওয়ালে মুর্চ্ছা সারে।
২৪। তেঁতুল পাতা আর হলুদ একসঙ্গে পিষে খেলে তা বসন্ত রোগের প্রতিষেধক বলে মনে করা হয়।
২৫। হলুদ আর খয়ের মিহি করে পিষে বসন্তের ঘায়ে লাগালে আরাম পাওয়া যায়।
২৬। খুব বেশি কাশির ঝোঁক হলে এক বাটি ঈষৎ উষ্ণ জলে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে ধীরে ধীরে পান করলে কাশির উপশম হয়।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply