মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর আসামিকে আদালতে হাজির করে দশ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, আসামি সাগর হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম অস্ত্রের জোগানদাতা ও সমন্বয়ক। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি। শুনানি শেষে আদালত সাগরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
এর আগে এর আগে হাদিসুর রহমান সাগরকে নব্য জেএমবির এই নেতাকে গতকাল বুধবার রাতে বগুড়ার শিবগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার অভিযোগপত্র প্রস্তুত । সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সবুজ সংকেত পেলেই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেবে তদন্তকারী সংস্থা। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক হাসনাত করিমকে এই মামলার অভিযোগপত্রে আসামি করা হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বলেছে, দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞের এই ঘটনার পরিকল্পনা, প্রস্তুতি, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র-বোমা সংগ্রহ, সমন্বয়, আক্রমণসহ বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত হিসেবে নব্য জেএমবির ২১ জনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। সেভাবে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। হাসনাত করিমকে অভিযোগপত্রভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হলে এই সংখ্যা হবে ২২।
জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে নিহত হন। নিহত এসব জঙ্গির অপরাধের বিবরণ অভিযোগপত্রে উল্লেখ থাকবে।
গতকাল গ্রেপ্তার হাদিসুর রহমান সাগর ও হাসনাত করিম ছাড়া এই মামলায় গ্রেপ্তার আছেন আরও পাঁচজন। তাঁরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাশেদ ওরফে র্যাশ, সোহেল মাহফুজ ওরফে নসরুল্লাহ, রকিবুল ইসলাম ওরফে রিগ্যান, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান। পুলিশ বলছে, এই পাঁচজনই নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও সদস্য।
এঁদের মধ্যে রাজীব গান্ধী, রকিবুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারি ও’কিচেন রেস্তোরাঁয় জঙ্গিরা অতর্কিতে হামলা চালায়। ওই রাতে সেখানে অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের বোমায় নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা রবিউল করিম ও সালাউদ্দিন খান। আহত হন র্যাব-১-এর তৎকালীন পরিচালক লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ ও পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসানসহ পুলিশের ৩১ সদস্য।
শ্বাসরুদ্ধকর এই হামলা ও জিম্মি পরিস্থিতির অবসান হয় পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে। অভিযানে পাঁচ জঙ্গি ছাড়াও নিহত হন ওই রেস্তোরাঁর পাচক সাইফুল ইসলাম চৌকিদার। পরে সেখান থেকে ১৮ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ, যাঁদের নৃশংসভাবে হত্যা করে জঙ্গিরা।
সেনা কমান্ডোদের অভিযানের আগে ও পরে ৩২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মধ্যে হাসনাত করিম ও তাঁর স্ত্রী, সন্তানও ছিলেন। হাসনাত করিমকে পরে এই ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা রেস্তোরাঁকর্মী জাকির হোসেন পরে হাসপাতালে মারা যান। পরে তদন্তে হোলি আর্টিজানের এই দুই কর্মীর সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply