শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে জানা গেছে, তালেবান নেতারা বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বংস্ত আফগানিস্তান থেকে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে বিদেশি সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে একটি খসড়া শান্তি চুক্তিতে সই করতে সম্মত হয়েছেন মার্কিন আলোচকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘতম যুদ্ধের ইতি টানতে কাতারে মার্কিন বিশেষ দূত জালমি খালিলজাদের সঙ্গে ছয়দিনের আলোচনা শেষে তালেবান সূত্র রয়টার্সকে বিস্তারিত জানিয়েছে।
তবে মার্কিন কর্মকর্তা কিংবা তালেবানের তরফে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে কাবুলে মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
আফগান বংশোদ্ভূত খলিলজাদ এক টুইটার পোস্টে বলেন, আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। অল্প কিছুদিন পর ফের বৈঠক হবে। আফগান সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসতে দেশটিতে রওনা হওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।
তিনি বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে কাতারের এ বৈঠক ফলপ্রসূ। গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আমাদের ব্যাপক অগ্রগতি ঘটেছে। এখনো অনেকগুলো বিষয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।
টুইটারে জালামি খলিলজাদ বলেন, সবকিছুতে সম্মতি না আসা পর্যন্ত কোনোকিছুতেই সম্মতি নেই। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ আলোচনা সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতিসহ সবকিছুকে যুক্ত করবে।
কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, প্রত্যাশিত সময়ের চেয়েও দীর্ঘ এ আলোচনার পর আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিকে বিস্তারিত জানাতে কাবুলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন জালমি খালিলজাদ।
তালেবান সূত্রানুসারে, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা তার মিত্র দেশের বিরুদ্ধে হামলায় আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাদের সুযোগ দেয়া হবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন তারা। ওয়াশিংটনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল এটি।
তবে খসড়া চুক্তিতে দুই পক্ষই সম্মত হয়েছে কিনা কিংবা কখন এটা শেষ হবে বা সই হবে- তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি।
তালেবানের বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গেছে, যুদ্ধবিরতিকে চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার সময়সীমা জানা যায়নি। যুদ্ধবিরতি যখন বাস্তবায়ন হবে কেবল তখনই আফগান সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা হবে তালেবানের।
এ পর্যন্ত আফগান সরকারের সঙ্গে বসতে বারবার অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন তারা। বরং মার্কিন পক্ষের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় গুরুত্ব দিচ্ছে কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটি। তালেবানের বিবেচনায়, যুক্তরাষ্ট্রই হচ্ছে তাদের প্রধান শত্রু। আর আফগান সরকার হচ্ছে কেবল পশ্চিমাদের পুতুল।
চুক্তির একটি অংশের বরাতে তালেবান সূত্র বলছে, ১৮ মাসের মধ্যে যদি বিদেশে বাহিনীকে প্রত্যাহার এবং যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হয়, তবে শান্তিপ্রক্রিয়ার অন্যান্য দিকগুলো কার্যকর হতে পারে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply