নাটোরের সিংড়ায় ১৯৭১ সালে নকিরন নেছা নামে এক নারী পাকবাহিনীর নির্যাতনের পর ১৯২৭সালে মারা যান। ১৯৭৫সালে আফছার আলী নামে এক প্রভাবশালী ভূয়া দলিল করে নকিরন নেছার স্বামী আজগর আলীকে গাছের সঙ্গে বেধে রেখে জমি দখল নিয়ে টিনের ঘরসহ ওই ঘরের যাবতীয় মালামাল লুট করে নেয়। উচ্ছেদ করে দেয়া হয় ছেলে আনোয়ার হোসেন আলীরাজ নামে এক সাংবাদিককে। উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের আগপাড়া শেরকোল গ্রামে এঘটনা ঘটে।
১৯৫৭ সালে আজিরন বেওয়া ও নূরুল হক নামে দুই ব্যক্তির নিকট থেকে আজগর আলী ও তার স্ত্রী নকিরন নেছা ৩৩শতাংশ জমি কিনে নেন। আজগর আলীর স্ত্রী নকিরন নেছা মারা যাওয়ার ১০/১২ বছর পর প্রতিবেশী আফছার আলী দাবী করে নকিরন নেছার জমি তিনি কিনে নিয়েছেন। কিন্তু কখনোই তার দলিল দেখাননি। প্রাণ ভয়ে আজগর আলী প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। ১৯৯১ সালে আজগর আলী মারা যাওয়ার আগে সিংড়া সিনিয়র সহকারী আদালত আফছার
আলীর দলিল ভূয়া ও বাটোয়ারা মামলা দায়ের করে। মামলা নম্বর ৭৭/৯১। তার আগে আজগর আলীর স্ত্রী নকিরন নেছা ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৯৭২ সালে মারা যান।
১৯৯৫ সালে আজগর আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন আলীরাজ ও তার মেয়ে ময়না খাতুনকে জোরপূর্বক আদালতে নিয়ে মামলা এফিডেভিট করে নিয়ে ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে দেয়। কাগজ পত্রের অভাবে কাউকে কিছুই বলতে পারে না। এভাবেই কেটে যায় ২৩বছর। গত ফেব্রুয়ারী মাসে আজগর আলীর ছেলে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন আলীরাজ কাগজপত্র উদ্ধার করে গত ২৪মার্চ উপজেলা ভূমি অফিসে আফছার আলীর খারিজ বাতিলের আবেদন করে।
২৭মার্চ শেরকোল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে উভয় পক্ষের কাগজপত্র চাওয়া হয়। কাগজপত্রে আজগর আলীর স্ত্রী নকিরন নেছার মৃত্যু ১৯৭২সালে। আর আফছার আলীর দলিল ১৯৭৫সালে। এবিষয়ে আফছার আলী দাম্ভিকতার সহিত বলেন, আদালতের রায় নিয়ে জমিতে আসতে হবে। নইলে ওই জমিতে তাকে আসতে দেয়া হবে না।
সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন আলীরাজ বলেন,১৯৯৫সালে আফছার আলী ভূয়া দলিল আদালতে দাখিল করে মামলার রায় পক্ষে নিয়ে আমাকে ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে দেয়। কাগজপত্রের অভাবে এতদিন কাউকে কিছুই বলতে পারিনি। শুনেছি, ১৯৭১সালে আমার মা পাকবাহিনীর নির্যাতনের শিকার। তবে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম নেই। তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply