অঙ্গীকার’ বাস্তবায়ন না করায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীকে শোকজ করার একমাস না পেরুতেই জাপার প্রেসিডিয়ামসহ সকল পদবী স্থগিত করেছেন পার্টির চেয়ারম্যান বিরোধী দলের নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
প্রসঙ্গত, পার্টির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হবার জন্য প্রত্যেককের কাছ থেকে পার্টির ফান্ডের জন্য পাঁচ কোটি টাকা দেয়ার জন্য একটি লিখিত চুক্তি হয়। এ চুক্তিতে পার্টির সংরক্ষিত আসনের চারজনই স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে এ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন মাসুদা এমএ রশিদ চৌধরী।
যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ মে পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা শোকজ নোটিশ করেন অধ্যাপিক মাসুদা চৌধুরীকে। শোকজ করার পর ‘রাঙ্গা সাহেব’ শোকজ করার কে বলে মন্তব্য করেন মাসুদা এমএ রশিদ চৌধুরী। এক পর্যায়ে মাসুদা তার ছেলে ব্যারিস্টার সানজীদকে বিষয়টি আইনী প্রতিক্রিয়ার কথা জানান। বিষয়টি জানার পর পার্টির মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
এবিষয়ে পার্টির অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ মনে করেন, এই ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। মনোনয়ন বাণিজ্য কম-বেশি অনেক রাজনৈতিক দলেই হয়ে থাকে, কিন্তু এভাবে লিখিত দলিল করে শর্ত সাপেক্ষে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনা রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের জন্য লজ্জার।
এ বিষয়ে জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের কাছে জানতে চাইলে এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।
এদিকে জাপা চেয়ারম্যান বার্ধক্যজনিত কারণে বেশি অসুস্থ থাকায় মাসুদাকে পার্টির সকল পদবী থেকে স্থগিত থাকার চিঠিতে স্বাক্ষরে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, ফান্ডে অর্থ না দেয়ার অভিযোগে সংসদ সদস্যের দলীয় পদ স্থগিত হওয়া দুঃখজনক। আর বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া আরো বেশি দুঃখজনক।
আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ আখতার বলেন, পার্টির মাসিক চাঁদা পরিশোধ না করায় তাকে প্রথমে শোকজ, পরবর্তীতে উত্তর না দেয়ায় তার সকল পদ স্থগিত করা হয়েছে। দলের ফান্ডে পাঁচ কোটি টাকা দেয়ার কথা ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। দলের মহাসচিব এমন চিঠি দিয়ে থাকলে এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়।
এ প্রসঙ্গে দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি বলেন, দল চালাতে অনেক খরচ। দলের দুটি কার্যালয়ে স্টাফ আছেন ৫২ জনের মতো, তাদের বেতন-ভাতা মিলিয়ে প্রায় ১৬ লাখ টাকা লাগে। এরকম নানা খরচ রয়েছে।
মনোনয়ন দেওয়ার সময় মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী অঙ্গীকার করেছিলেন যে তিনি চট্টগ্রামে দলকে সুসংগঠিত করতে ভূমিকা রাখবেন, সেখানে অফিস নেবেন, দল চালাবেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। এছাড়া দুই বছর ধরে মাসিক চাঁদা পরিশোধ করেননি। এখানে আর গোপন কোনো অঙ্গীকার ছিল না। উনি (মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী) লিখিত সন্তোষজনক কোনো জবাব দেননি।
এদিকে মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর পক্ষে তার ছেলে সানজীদ রশীদ চৌধুরী বলেন, মা’য়ের দলীয় পদ স্থগিতের বিষয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, রওশন এরশাদ ও জিএম কাদের কিছুই জানেন না। আমার মা নিয়মিত পার্টির চাদা পরিশোধ করেন না বলে রাঙ্গা সাহেব মিথ্যাচার করছেন। রাঙ্গাকে ইতিমধ্যে ৩ কোটি দশ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। তিনি সে টাকা পার্টির ফান্ডে না রেখে নিজের কাছে রেখেছেন। তিনি যা কিছু করছেন তার ব্যক্তি স্বার্থে করছেন বলেও অভিযোগ করেন ব্যারিস্টার সানজীদ।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply